মানব জাতির ইতিহাস খুঁজলে পাওয়া যাবে আদম আলাইহিস সালামই তাঁদের আদি পিতা। আর তাঁরই হতে হাওয়া আ.- কে সৃষ্টি করে আল্লাহ তা'আলা অগণিত বনি আদম পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। যখন মানুষ স্বীয় দায়িত্ব-কর্তব্য ভুলে বিপথগামী হতে বসেছে, তখনই অসীম দয়ালু আল্লাহ তাদেরকে সত্য পথ দেখানোর জন্য যুগে নবী ও রাসূলদেরকে এ ধরাপৃষ্ঠে পাঠিয়েছেন। আর যখন নবী রাসূলগণ দুনিয়া ছেড়ে চলে যান উম্মতদেরকে রেখে, তখন তারা পরকালের কথা ভুলে নবীদের কথা ভুলে দুনিয়ামুখি হয়ে পড়ে। শুরু করে অপকর্ম, যে যুগটাকে এখনো মানুষ আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগ বলে চিনে। জাহেল অর্থ অন্ধকার, যে যুগে ইসলাম তথা আলোর পথ ভুলে অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল তখনকার লোকেরা তাই তাদের জাহেলী যুগ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
সেই জাহেলী (অন্ধকার) যুগে আরবগণ কন্যাসন্তানকে হত্যা করত এবং তাদেরকে জীবন্ত কবর দিত। অনাথ শিশুদেরকে দয়া-মায়া দেখানো হতো না। লুটতরাজ করা হতো এবং কাঠ ও পাথরের প্রতিমাসমূহের পূজা করা হতো। তখন এক-অদ্বিতীয় আল্লাহর ব্যাপারে বিন্দুমাত্রও চিন্তা-ভাবনা করা হতো না। (অথচ ইসলামোত্তর যুগে এ সব কুসংস্কার ও কুপ্রথা সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যায়)।
এবং সমাজে নারীদেরকে পণ্যের মতো কেনা-বেচা করা হতো। তারা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও সামাজিক অধিকার, এমনকি উত্তরাধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিল। আরব বুদ্ধিজীবীরা নারীদেরকে পশু বলে মনে করত। আর এ কারণেই তাদেরকে দৈনন্দিন জীবনের পণ্য-সামগ্রী ও আসবাবপত্রের মধ্যে গণ্য করা হতো।
প্রধানত দুর্ভিক্ষের ভয়ে এবং কখনো কলুষতা ও অশুচিতার ভয়ে আরবরা মেয়েদেরকে জন্মগ্রহণের পরপরই হত্যা করে ফেলত। কখনো পাহাড়ের ওপরে তুলে সেখান থেকে নিচে ফেলে দিত এবং কখনো পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করত।
যখন তাদের কোন এক ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণের সুসংবাদ দেয়া হতো তখন তার বর্ণ কালো হয়ে যেত এবং বাহ্যত সে যেন তার ক্রোধকে চাপা দিত। আর এই জঘন্য সংবাদ শোনার কারণে সে (লজ্জায়) তার সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াত। আর সে জানত না যে, সে কি অপমান ও লাঞ্ছনা সহকারে তার এ নবজাতক কন্যাসন্তান প্রতিপালন করবে, নাকি তাকে মাটির নিচে জীবন্ত পুঁতে ফেলবে? সত্যিই তাদের ফয়সালা কতই না জঘন্য!
সবচেয়ে দুঃখজনক ছিল আরবদের বৈবাহিক ব্যবস্থা। পৃথিবীতে এর কোন নজির বিদ্যমান নেই। যেমন আরবদের কাছে স্ত্রীর কোন সুনির্দিষ্ট সংখ্যা ছিল না। স্ত্রীর মোহরানা যাতে আদায় করতে না হয় সেজন্য তারা স্ত্রীদেরকে নির্যাতন ও উৎপীড়ন করত। কোন মহিলা চারিত্রিক সততার পরিপন্থী কোন কাজ করলেই তার মোহরানা সম্পূর্ণরূপে বাতিল হয়ে যেত। কখনো আরবরা এ নিয়মের অপব্যবহার করত। মোহরানা যাতে আদায় করতে না হয় সেজন্য তারা নিজেদের স্ত্রীদের ওপর অপবাদ আরোপ করত। পুত্রসন্তানগণ পিতার মৃত্যুর পর বা পিতা তালাক দিলে পিতার স্ত্রীদেরকে নিজের স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারত এবং এতে কোন অসুবিধা ছিল না। এমন অনেক ছিল কাফিরদের ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট প্রথা যা এই ক্ষুদ্রতম বইয়ে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
এই অন্ধকার যুগে জাহেলিয়াতকে দূর করতে এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হিসেবে মহান আল্লাহ তা'য়ালা বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)কে এমন উত্তম চরিত্রে সাজিয়ে পাঠিয়েছেন, যে জন্য মহান রাববুল আলামীন নিজেই ঘোষণা দিলেন যে, চারিত্রিক এমন কোনো গুণ অবশিষ্ট ছিল না যা তাঁর চরিত্রে অনুপস্থিত।
যেমন আল্লাহ পাক পবিত্র কোরান মজিদে বলেন, 'আপনি অবশ্যই মহত্তম চরিত্রে অধিষ্ঠিত' (কলম ৬৮/৪)।'
যাকে বিশ্ব জগতের মালিক আল্লাহ তালা উত্তম চরিত্রের সনদ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, কেমন হবেন তিনি জেনে নিন তাঁর জীবনী থেকে।
জন্ম তারিখ: হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। প্রচলিত ধারনা মোতাবেক, উনার জন্ম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে।
নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর বংশ পরিচয় ও পরিবার:
নাম : মুহাম্মাদ (সা:) (আসমানে আহমাদ নামেই প্রসিদ্ধ)
উপনাম : আবুল কাসেম।
পিতা : আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব (আবদুল মুত্তালিবের দশ সন্তানের সর্বকনিষ্ঠ)।
মাতা : আমিনা বিনতে ওহ্হাব।
দুধ মা : হালিমা বিনতে সাদিয়া।
দাদা : আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম।
দাদি : ফাতেমা বিনতে আমর।
নানা : ওহ্হাব বিন আবদে মানাফ।
নানি : বোররা বিনতে ওমজা।
বংশলতিকা:
মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম বিন আবদে মানাফ বিন কুসাই বিন কিলাব বিন মোররা বিন কা'আব বিন লুয়াই বিন গালেব বিন ফেহের; (তাঁর উপাধি ছিল কোরাইশ, এখান থেকেই কোরাইশ বংশের প্রচলন) বিন মালেক বিন নজর বিন কানানাহ বিন খোজাইমা বিন মোদরাকা বিন ইলিয়াস বিন মুজার বিন নেজার বিন মা'আদ বিন আদনান। (এ পর্যন্ত সমস্ত ঐতিহাসিকের মতে ঐক্য ও সমতা রয়েছে।
এ বংশলতিকা হজরত ইসমাঈল ও ইবরাহীম আ. হয়ে হজরত আদম আ. পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বংশ, গোত্র ও জন্মের সময়: কালীন সময়ে মক্কায় আরব সমাজে সবচেয়ে বিখ্যাত ও প্রভাবশালী গোত্র ছিল কুরাইশ গোত্র। সে সময়ে কুরাইশ গোত্রকে সকলেই শ্রদ্ধা করতো এবং সম্মান দিত। তবে কুরাইশ গোত্রের কোনো সদস্য রাষ্ট্র ক্ষমতা বা দেশ পরিচালনায় নিয়জিত ছিল না। মক্কার সেই বিখ্যাত কুরাইশ গোত্রেই পৃথিবীতে আগমন করেন নবী মুহাম্মাদ (সা:)।
বংশ: সে সময়ে মক্কার বুকে মানুষ সর্বজনীন হিসেবে যে বংশকে বেশি প্রাধান্য দিত যা গৃহীত ছিল তা হচ্ছে হাশেমি বংশ আর এই সুপ্রসিদ্ধ হাশেমি বংশেই জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
জন্ম সময়: রাত অতিবাহিত হয়ে প্রত্যুষের সময়টাতে হযরত মুহাম্মাদ (সা:) জন্মগ্রহণ করেন, অর্থাৎ পুরোপুরি রাতও নয় আবার দিনও নয় মধ্যবর্তী সময়ে তিনি পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। জন্মের পূর্বেই মোহাম্মাদ (সা:) তাঁর পিতাকে হারিয়ে এতিম হয়েছেন। ছয় বছর বয়সে মা আমিনা এবং আট বছর বয়সে দাদা আবদুল মুত্তালিব এর মৃত্যুর পর এতিম শিশু মুহাম্মাদ এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তাঁর আপন চাচা আবু তালিব।
শৈশব ও কৈশোর কাল: তৎকালীন আরবের রীতি ছিল যে, তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মুহাম্মাদ (সা:)- কেও বিবি হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। শিশু মুহাম্মাদকে ঘরে আনার পর দেখা যায় বিবি হালিমার সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন।
তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য–শিশু মুহাম্মাদ কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর দুধমা হালিমা শিশু মুহাম্মাদকে নিজের মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই পুরো মক্কা জুড়ে আকস্মিক মহামারী দেখা দেয় যার ফলে মা আমিনা নিজে অতটা যত্নবান হতে পারবেন না বলে পুনরায় শিশু মুহাম্মাদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেন। এদিকে বিবি হালিমাও মনে চাচ্ছিলেন শিশু মুহাম্মদকে আবার ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল।
http://itibritto.com/
Wikipedia
সেই জাহেলী (অন্ধকার) যুগে আরবগণ কন্যাসন্তানকে হত্যা করত এবং তাদেরকে জীবন্ত কবর দিত। অনাথ শিশুদেরকে দয়া-মায়া দেখানো হতো না। লুটতরাজ করা হতো এবং কাঠ ও পাথরের প্রতিমাসমূহের পূজা করা হতো। তখন এক-অদ্বিতীয় আল্লাহর ব্যাপারে বিন্দুমাত্রও চিন্তা-ভাবনা করা হতো না। (অথচ ইসলামোত্তর যুগে এ সব কুসংস্কার ও কুপ্রথা সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যায়)।
এবং সমাজে নারীদেরকে পণ্যের মতো কেনা-বেচা করা হতো। তারা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও সামাজিক অধিকার, এমনকি উত্তরাধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিল। আরব বুদ্ধিজীবীরা নারীদেরকে পশু বলে মনে করত। আর এ কারণেই তাদেরকে দৈনন্দিন জীবনের পণ্য-সামগ্রী ও আসবাবপত্রের মধ্যে গণ্য করা হতো।
প্রধানত দুর্ভিক্ষের ভয়ে এবং কখনো কলুষতা ও অশুচিতার ভয়ে আরবরা মেয়েদেরকে জন্মগ্রহণের পরপরই হত্যা করে ফেলত। কখনো পাহাড়ের ওপরে তুলে সেখান থেকে নিচে ফেলে দিত এবং কখনো পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করত।
যখন তাদের কোন এক ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণের সুসংবাদ দেয়া হতো তখন তার বর্ণ কালো হয়ে যেত এবং বাহ্যত সে যেন তার ক্রোধকে চাপা দিত। আর এই জঘন্য সংবাদ শোনার কারণে সে (লজ্জায়) তার সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াত। আর সে জানত না যে, সে কি অপমান ও লাঞ্ছনা সহকারে তার এ নবজাতক কন্যাসন্তান প্রতিপালন করবে, নাকি তাকে মাটির নিচে জীবন্ত পুঁতে ফেলবে? সত্যিই তাদের ফয়সালা কতই না জঘন্য!
সবচেয়ে দুঃখজনক ছিল আরবদের বৈবাহিক ব্যবস্থা। পৃথিবীতে এর কোন নজির বিদ্যমান নেই। যেমন আরবদের কাছে স্ত্রীর কোন সুনির্দিষ্ট সংখ্যা ছিল না। স্ত্রীর মোহরানা যাতে আদায় করতে না হয় সেজন্য তারা স্ত্রীদেরকে নির্যাতন ও উৎপীড়ন করত। কোন মহিলা চারিত্রিক সততার পরিপন্থী কোন কাজ করলেই তার মোহরানা সম্পূর্ণরূপে বাতিল হয়ে যেত। কখনো আরবরা এ নিয়মের অপব্যবহার করত। মোহরানা যাতে আদায় করতে না হয় সেজন্য তারা নিজেদের স্ত্রীদের ওপর অপবাদ আরোপ করত। পুত্রসন্তানগণ পিতার মৃত্যুর পর বা পিতা তালাক দিলে পিতার স্ত্রীদেরকে নিজের স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারত এবং এতে কোন অসুবিধা ছিল না। এমন অনেক ছিল কাফিরদের ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট প্রথা যা এই ক্ষুদ্রতম বইয়ে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
এই অন্ধকার যুগে জাহেলিয়াতকে দূর করতে এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হিসেবে মহান আল্লাহ তা'য়ালা বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)কে এমন উত্তম চরিত্রে সাজিয়ে পাঠিয়েছেন, যে জন্য মহান রাববুল আলামীন নিজেই ঘোষণা দিলেন যে, চারিত্রিক এমন কোনো গুণ অবশিষ্ট ছিল না যা তাঁর চরিত্রে অনুপস্থিত।
যেমন আল্লাহ পাক পবিত্র কোরান মজিদে বলেন, 'আপনি অবশ্যই মহত্তম চরিত্রে অধিষ্ঠিত' (কলম ৬৮/৪)।'
যাকে বিশ্ব জগতের মালিক আল্লাহ তালা উত্তম চরিত্রের সনদ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, কেমন হবেন তিনি জেনে নিন তাঁর জীবনী থেকে।
জন্ম তারিখ: হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। প্রচলিত ধারনা মোতাবেক, উনার জন্ম ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে।
নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর বংশ পরিচয় ও পরিবার:
নাম : মুহাম্মাদ (সা:) (আসমানে আহমাদ নামেই প্রসিদ্ধ)
উপনাম : আবুল কাসেম।
পিতা : আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব (আবদুল মুত্তালিবের দশ সন্তানের সর্বকনিষ্ঠ)।
মাতা : আমিনা বিনতে ওহ্হাব।
দুধ মা : হালিমা বিনতে সাদিয়া।
দাদা : আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম।
দাদি : ফাতেমা বিনতে আমর।
নানা : ওহ্হাব বিন আবদে মানাফ।
নানি : বোররা বিনতে ওমজা।
বংশলতিকা:
মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশেম বিন আবদে মানাফ বিন কুসাই বিন কিলাব বিন মোররা বিন কা'আব বিন লুয়াই বিন গালেব বিন ফেহের; (তাঁর উপাধি ছিল কোরাইশ, এখান থেকেই কোরাইশ বংশের প্রচলন) বিন মালেক বিন নজর বিন কানানাহ বিন খোজাইমা বিন মোদরাকা বিন ইলিয়াস বিন মুজার বিন নেজার বিন মা'আদ বিন আদনান। (এ পর্যন্ত সমস্ত ঐতিহাসিকের মতে ঐক্য ও সমতা রয়েছে।
এ বংশলতিকা হজরত ইসমাঈল ও ইবরাহীম আ. হয়ে হজরত আদম আ. পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বংশ, গোত্র ও জন্মের সময়: কালীন সময়ে মক্কায় আরব সমাজে সবচেয়ে বিখ্যাত ও প্রভাবশালী গোত্র ছিল কুরাইশ গোত্র। সে সময়ে কুরাইশ গোত্রকে সকলেই শ্রদ্ধা করতো এবং সম্মান দিত। তবে কুরাইশ গোত্রের কোনো সদস্য রাষ্ট্র ক্ষমতা বা দেশ পরিচালনায় নিয়জিত ছিল না। মক্কার সেই বিখ্যাত কুরাইশ গোত্রেই পৃথিবীতে আগমন করেন নবী মুহাম্মাদ (সা:)।
বংশ: সে সময়ে মক্কার বুকে মানুষ সর্বজনীন হিসেবে যে বংশকে বেশি প্রাধান্য দিত যা গৃহীত ছিল তা হচ্ছে হাশেমি বংশ আর এই সুপ্রসিদ্ধ হাশেমি বংশেই জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
জন্ম সময়: রাত অতিবাহিত হয়ে প্রত্যুষের সময়টাতে হযরত মুহাম্মাদ (সা:) জন্মগ্রহণ করেন, অর্থাৎ পুরোপুরি রাতও নয় আবার দিনও নয় মধ্যবর্তী সময়ে তিনি পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। জন্মের পূর্বেই মোহাম্মাদ (সা:) তাঁর পিতাকে হারিয়ে এতিম হয়েছেন। ছয় বছর বয়সে মা আমিনা এবং আট বছর বয়সে দাদা আবদুল মুত্তালিব এর মৃত্যুর পর এতিম শিশু মুহাম্মাদ এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তাঁর আপন চাচা আবু তালিব।
শৈশব ও কৈশোর কাল: তৎকালীন আরবের রীতি ছিল যে, তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মুহাম্মাদ (সা:)- কেও বিবি হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। শিশু মুহাম্মাদকে ঘরে আনার পর দেখা যায় বিবি হালিমার সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন।
তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য–শিশু মুহাম্মাদ কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর দুধমা হালিমা শিশু মুহাম্মাদকে নিজের মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই পুরো মক্কা জুড়ে আকস্মিক মহামারী দেখা দেয় যার ফলে মা আমিনা নিজে অতটা যত্নবান হতে পারবেন না বলে পুনরায় শিশু মুহাম্মাদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেন। এদিকে বিবি হালিমাও মনে চাচ্ছিলেন শিশু মুহাম্মদকে আবার ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল।
নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর জীবনী -জন্ম, বংশ পরিচয় ও পরিবার, শৈশবকাল (P-I) সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর জীবনী -কৈশরকাল, পারিবারিক জীবন, নওবুয়ত (P-II) সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর জীবনী -মক্কী জীবন তথা ইসলাম প্রচার, ইসলামের দাওয়াত ও তায়েফ গমন (P-III) সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর জীবনী -মদিনায় হিজরত ও মাদানী জীবন, স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও শাসননীতি, মক্কা বিজয় ও বিদায় হজ ও ঐতিহাসিক ভাষণ এবং নবীজি (সা:)- এর ওফাত (P-IV) সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- নবী মুহাম্মাদ (সা:) এর জীবনী - রাসূল (ছাঃ)- এর উপরে কাফিরদের নির্যাতন (P-V) সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
http://itibritto.com/
Wikipedia
No comments:
Post a Comment